জকিগঞ্জ উপজেলার কালীগঞ্জ বাজারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, সিলেট জেলার অন্যতম সদস্য ও উপজেলা জামায়াতের যুব বিভাগের সেক্রেটারি আলী হোসেনের ওপর ছাত্রলীগ নেতাদের সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (৫ এপ্রিল) রাত ৮: ৩০ মিনিটের দিকে বাজারের পূর্ব পাশে একটি দোকানের সামনে এ হামলা চালানো হয়
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, এমসি কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আহমেদ আল জুবের, জেলা ছাত্রলীগ নেতা আহমেদ আল রেদোয়ান ও মেসবাহুল ইসলাম সোহেল, আলী হোসেনের ওপর অতর্কিতে হামলা চালান। হামলাকারীরা লোহার রড দিয়ে একাধিকবার আঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় আলী হোসেনকে উদ্ধার করে জকিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে সিলেটের ইবনে সিনা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আলী হোসেন কসকনকপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং আব্দুল কাইয়ুমের ছেলে। তিনি জকিগঞ্জ উপজেলা ছাত্রশিবিরের সাবেক সেক্রেটারিও ছিলেন।
ঘটনার পর থেকেই কালীগঞ্জ বাজার ও আশপাশের এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন একত্রিত হয়ে জকিগঞ্জ শহরে ও কালীগঞ্জ বাজারে প্রতিবাদ মিছিল বের করে। রাত ১০টার দিকে কালীগঞ্জে একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। আন্দোলনকারীরা দ্রুত হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন—দোষীরা আজকের মধ্যেই গ্রেপ্তার না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামির যুব বিভাগের সভাপতি আবিদুর রহমান বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়ায় যারা মানুষ হত্যার রাজনীতি উসকে দিচ্ছেন, তারা ময়দানে নামুন, দেখা হবে ইনশাআল্লাহ। শান্ত জকিগঞ্জকে অশান্ত করে জামায়াতের নেতাকে রক্তাক্ত করা হয়েছে। কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা দোষীদের দ্রুত বিচার দাবি করছি এবং সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজনৈতিক সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি।”
এ বিষয়ে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্র আন্দোলনের সক্রিয় সদস্য হাবিব মাসরুর বলেন, “আমাদের আন্দোলনের সহযোদ্ধা আলী হোসেনের ওপর ছাত্রলীগের এই বর্বর হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।”
উল্লেখ্য, হামলার সঙ্গে জড়িত ছাত্রলীগ নেতারা—আহমেদ আল জুবের ও আহমেদ আল রেদোয়ান আপন চাচা-ভাতিজা। তারা জকিগঞ্জ উপজেলার ৯নং মানিকপুর ইউনিয়নের সুরানন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা।
ঘটনার পর থেকেই জকিগঞ্জের রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে নিন্দার ঝড় উঠেছে। বিভিন্ন সংগঠন হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে একাত্মতা প্রকাশ করেছে।










