জকিগঞ্জ ০৩:৩২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ২০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও অব্যবস্থাপনায় জকিগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চরম ভোগান্তি, ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ

নিউজ ডেস্ক: সিলেট-এর সীমান্তবর্তী জকিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘ ২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায়  মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রোগীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বিদ্যুৎবিহীন ছিল হাসপাতালটি, যা সাড়ে তিন লাখ মানুষের একমাত্র ভরসাস্থল এই স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রটির নাজুক চিত্রটি আবারও সামনে নিয়ে এসেছে।

দীর্ঘ বিদ্যুৎ বিভ্রাটে করুণ দশা

দীর্ঘ ২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায় হাসপাতালের পরিবেশ অত্যন্ত শোচনীয় হয়ে ওঠে। জরুরি চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা অন্ধকারে ও গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েন। মিজান নামে এক ব্যক্তি তার আশঙ্কাজনক রোগীকে নিয়ে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, হাসপাতালে রোগীকে সুস্থ করার জন্য আনলাম, এখন দেখছি রোগী সুস্থ হওয়ার বদলে আরও অসুস্থ হচ্ছেন। তিনি দ্রুত সমস্যার সমাধানের জন্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জেনারেটর বা পর্যাপ্ত আইপিএস (IPS) না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এস এম আব্দুল আহাদ সমস্যাটির সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি জানান, তাদের পুরোনো জেনারেটরটি অনেক দিন ধরেই নষ্ট এবং নতুন কেনার জন্য পর্যাপ্ত বাজেট নেই। আইপিএস-ও দীর্ঘ সময় ব্যাকআপ দিতে সক্ষম নয়। তবে তিনি নতুন জেনারেটরের জন্য আবেদন করেছেন বলে জানান।

সেবার মান ও পরিচ্ছন্নতা নিয়ে গুরুতর অভিযোগ—

দীর্ঘদিন ধরেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবার মান নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। সম্প্রতি এক রোগী অভিযোগ করেন যে, চিকিৎসা না পেয়ে তাঁকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে, কারণ জরুরি বিভাগে থাকা কর্মকর্তা নিজের ডিউটি ফাঁকি দিয়ে ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের সাথে ব্যস্ত ছিলেন। এমন গাফিলতির কারণে জরুরি চিকিৎসাপ্রার্থীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

এছাড়াও, হাসপাতালের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ক্ষেত্রেও পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক। রোগীদের অভিযোগ, হাসপাতালের দুর্গন্ধ ও অপরিষ্কার পরিবেশ তাঁদের রোগ সারানোর পরিবর্তে আরও অসুস্থ করে তুলছে।

চিকিৎসক সংকট ও অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই—

সাড়ে তিন লাখ মানুষের চিকিৎসার একমাত্র কেন্দ্র হওয়া সত্ত্বেও জকিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট ও পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধার অভাব বিদ্যমান। সুযোগ-সুবিধার এই ঘাটতির কারণে হাসপাতালটি যেন নিজের অস্তিত্ব রক্ষায় হিমশিম খাচ্ছে।

উপজেলাবাসী বলছেন, স্বাস্থ্য খাতের এই গাফিলতি অবিলম্বে বন্ধ করে সাধারণ মানুষের মৌলিক চিকিৎসার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। তাঁরা আশঙ্কা করছেন, পরিস্থিতির দ্রুত উন্নয়ন না হলে সীমান্তবর্তী এই অঞ্চলের মানুষ স্বাস্থ্য সেবার ক্ষেত্রে আরও চরম সংকটে পড়বে। সাধারণ মানুষের দাবি, কর্তৃপক্ষ দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবার মান পুনরুদ্ধার করুক।

ট্যাগস :

জকিগঞ্জ উপজেলা খেলাফত মজলিসের দায়িত্বশীল বৈঠক অনুষ্ঠিত

বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও অব্যবস্থাপনায় জকিগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চরম ভোগান্তি, ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ

আপডেট সময় : ১০:০০:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫

নিউজ ডেস্ক: সিলেট-এর সীমান্তবর্তী জকিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘ ২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায়  মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রোগীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বিদ্যুৎবিহীন ছিল হাসপাতালটি, যা সাড়ে তিন লাখ মানুষের একমাত্র ভরসাস্থল এই স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রটির নাজুক চিত্রটি আবারও সামনে নিয়ে এসেছে।

দীর্ঘ বিদ্যুৎ বিভ্রাটে করুণ দশা

দীর্ঘ ২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায় হাসপাতালের পরিবেশ অত্যন্ত শোচনীয় হয়ে ওঠে। জরুরি চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা অন্ধকারে ও গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েন। মিজান নামে এক ব্যক্তি তার আশঙ্কাজনক রোগীকে নিয়ে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, হাসপাতালে রোগীকে সুস্থ করার জন্য আনলাম, এখন দেখছি রোগী সুস্থ হওয়ার বদলে আরও অসুস্থ হচ্ছেন। তিনি দ্রুত সমস্যার সমাধানের জন্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জেনারেটর বা পর্যাপ্ত আইপিএস (IPS) না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এস এম আব্দুল আহাদ সমস্যাটির সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি জানান, তাদের পুরোনো জেনারেটরটি অনেক দিন ধরেই নষ্ট এবং নতুন কেনার জন্য পর্যাপ্ত বাজেট নেই। আইপিএস-ও দীর্ঘ সময় ব্যাকআপ দিতে সক্ষম নয়। তবে তিনি নতুন জেনারেটরের জন্য আবেদন করেছেন বলে জানান।

সেবার মান ও পরিচ্ছন্নতা নিয়ে গুরুতর অভিযোগ—

দীর্ঘদিন ধরেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবার মান নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। সম্প্রতি এক রোগী অভিযোগ করেন যে, চিকিৎসা না পেয়ে তাঁকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে, কারণ জরুরি বিভাগে থাকা কর্মকর্তা নিজের ডিউটি ফাঁকি দিয়ে ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের সাথে ব্যস্ত ছিলেন। এমন গাফিলতির কারণে জরুরি চিকিৎসাপ্রার্থীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

এছাড়াও, হাসপাতালের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ক্ষেত্রেও পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক। রোগীদের অভিযোগ, হাসপাতালের দুর্গন্ধ ও অপরিষ্কার পরিবেশ তাঁদের রোগ সারানোর পরিবর্তে আরও অসুস্থ করে তুলছে।

চিকিৎসক সংকট ও অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই—

সাড়ে তিন লাখ মানুষের চিকিৎসার একমাত্র কেন্দ্র হওয়া সত্ত্বেও জকিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট ও পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধার অভাব বিদ্যমান। সুযোগ-সুবিধার এই ঘাটতির কারণে হাসপাতালটি যেন নিজের অস্তিত্ব রক্ষায় হিমশিম খাচ্ছে।

উপজেলাবাসী বলছেন, স্বাস্থ্য খাতের এই গাফিলতি অবিলম্বে বন্ধ করে সাধারণ মানুষের মৌলিক চিকিৎসার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। তাঁরা আশঙ্কা করছেন, পরিস্থিতির দ্রুত উন্নয়ন না হলে সীমান্তবর্তী এই অঞ্চলের মানুষ স্বাস্থ্য সেবার ক্ষেত্রে আরও চরম সংকটে পড়বে। সাধারণ মানুষের দাবি, কর্তৃপক্ষ দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবার মান পুনরুদ্ধার করুক।