সিলেট-৫ (জকিগঞ্জ-কানাইঘাট) আসনকে ঘিরে রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়তে শুরু করেছে। বিশেষ করে ইসলামপন্থী দলগুলোর মধ্যে জোট গঠনের সম্ভাবনা জোরালো হচ্ছে। জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে একটি ইসলামী জোট গঠনের আলোচনা চলেছে, যাতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও খেলাফত মজলিস ও অন্যান্য ইসলামী দলগুলো অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জোটের মধ্যে জামায়াতের প্রার্থী হাফিজ আনোয়ার হোসাইন খান নির্বাচনী মাঠে এগিয়ে রয়েছেন।
জোটের সম্ভাব্য তিন প্রার্থী হলেন:
হাফিজ আনোয়ার হোসাইন খান (জামায়াতে ইসলামী): দীর্ঘদিন ধরে সংগঠনের সিলেট জেলা (উত্তর) আমীর ও বর্তমানে একীভূত সিলেট জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীরের দায়িত্বে থাকা এই নেতা জকিগঞ্জ-কানাইঘাটে পরিচিত মুখ। তিনি সংগঠনের কার্যক্রম ও জনসেবার মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে আস্থা অর্জন করেছেন।
মুফতী রেজাউল করিম আবরার (ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ): তরুণ ও শিক্ষিত এই প্রার্থী দলের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে সক্রিয়। তরুণ প্রজন্ম ও ধর্মীয় মূল্যবোধসম্পন্ন ভোটারদের মধ্যে তার গ্রহণযোগ্যতা বাড়ছে।
মুফতী আবুল হাসান (খেলাফত মজলিস): স্থানীয়ভাবে সম্মানিত আলেম হলেও নির্বাচনী মাঠে তার তৎপরতা তুলনামূলকভাবে সীমিত।তবে তিনি এলাকার সকলের মধ্যে খুবই গ্রহণযোগ্য ও পরিচিত মুখ।
জামায়াতের সাংগঠনিক শক্তি ও আনোয়ার হোসাইনের জনপ্রিয়তাঃ
জামায়াতে ইসলামীর তৃণমূল কাঠামো এই দুই উপজেলায় ব্যাপক সক্রিয় রয়েছে। স্থানীয় পর্যায়ে হাফিজ আনোয়ার হোসাইন খান-এর ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা, ধার্মিক জীবনধারা ,বিগত দিনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়ে জনকল্যাণমুখী কার্যক্রম ও জনসম্পৃক্ততা তাকে প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় এগিয়ে রেখেছে। তার নেতৃত্বে জামায়াত ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে কার্যক্রম বিস্তৃত করেছে, যা এখন নির্বাচনী মূলধনে পরিণত হচ্ছে।পাশাপাশি সাবেক জনপ্রিয় সংসদ সদস্য ফরিদ উদ্দিন চৌধুরীর উত্তরসূরী হওয়ায় ভোটের মাঠে জোটের অন্যান্য সম্ভাব্য প্রার্থীর চেয়ে তিনি এগিয়ে আছেন।
জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলায় প্রবাসী ভোটারদের প্রভাব উল্লেখযোগ্য। জামায়াত-সমর্থিত নেতাদের সঙ্গে প্রবাসীদের দীর্ঘ সম্পর্ক রয়েছে, যা আনোয়ার হোসাইন খানের পক্ষে যেতে পারে। তাছাড়া, ইসলামপন্থী ভোটারদের একক প্ল্যাটফর্মে আনার ক্ষেত্রে জামায়াত অনেকটাই সফল ভূমিকা পালন করছে।
জোট প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হলে এবং একক প্রার্থী হিসেবে আনোয়ার হোসাইন খান নির্বাচনী মাঠে নামলে ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী ভোটারদের ভোট ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে, বিএনপি জোটের দলগুলো যদি আলাদা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামে, তাহলে ভোট বিভাজনের সুবিধা নিয়ে ইসলামি জোটের প্রার্থী ভালো অবস্থানে যেতে পারেন।
সিলেট-৫ আসনে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইসলামপন্থী জোটের জন্য বড় পরীক্ষার ক্ষেত্র হয়ে উঠতে পারে। যদি জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও খেলাফত মজলিস ঐক্যমতে পৌঁছে হাফিজ আনোয়ার হোসাইন খানকে একক প্রার্থী হিসেবে মাঠে নামায়, তাহলে তিনি একটি শক্তিশালী নির্বাচনী লড়াইয়ের মুখ্য প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠতে পারেন।তাছাড়াও অন্য দুই প্রার্থীর মধ্যে থেকেও কাউকে মনোনয়ন দিলেও জোটের সকল দলের নেতাকর্মীরা তার পক্ষেই কাজ করবেন এমনটাই মনে করছেন সম্ভাব্য জোটের স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
লেখক:আহমদ শাহ তামিম
প্রবাসী ও সাবেক সভাপতি-(যুব বিভাগ)জামায়াতে ইসলামী,জকিগঞ্জ উপজেলা) ।










