মামুনুর রশিদ: নিজের এলাকার সমস্যা গুলো নিয়ে গত একমাস থেকে এতটাই মনযোগী, অন্য কোন বিষয় নিয়ে ভাববারও সময় পাচ্ছি না!!
শারীরিক ভাবে কিছুটা অসুস্থ!!
মানসিক ভাবেও খুব একটা ভালো অবস্থানে নাই!!
তাও সাংবাদিক ভাইদের সাথে কথা বলা, এলাকায় সমস্যা গুলো নিয়ে উপরে মহলে অব্যাহত ভাবে চাপ প্রয়োগ করা, এলাকার সাধারণ মানুষের বিভিন্ন পরামর্শ শুনা, এগুলো নিয়েই দিনের পুরোটা সময়ই প্রায় পার হয়ে যায়!!
আমার কিছু হিতাকাঙ্খী বন্ধুদের পরামর্শ, রাজনৈতিক বিষয়ে যেন কম কথা বলি।
মনে মনে এমনই একটা সঙ্কল্প করছিলাম, নিজের এলাকা নিয়েই পুরোপুরি নিমগ্ন থাকবো, জাতীয় রাজনৈতিক বিষয়ে কম কথা বলবো।
কিন্তু একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে কিছু জিনিস চাইলেও এড়িয়ে যাওয়া যায় না।
তাছাড়া সাংবাদিক বন্ধুদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে রাজনৈতিক ভাবনা থেকে নিজেকে দূরে রাখা বলা যায় প্রায় অসম্ভব।

এখানে সংযুক্ত তিনটি ক্লিপের প্রতি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
প্রথম ক্লিপটি ২/৩ দিন আগে সম্ভব দৈনিক সমকালে প্রকাশিত একটি নিউজ থেকে নেওয়া।
সেটাতে চলমান সংস্কার প্রস্তাবে কোন দলের কি অবস্থান সেটা মনেহয় বুঝতে চাওয়া হয়েছে।
তবে নিউজের ভিতরে কিন্ত সম্মানিত সাংবাদিক ভাই পুরো বিষয়টি বর্ণনা করলেও, এই ক্লিপ দেখে যে কেউ মনে করবে, জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের কোন প্রস্তাবের সাথেই বিএনপি একমত নয়!!
আমার জানা মতে এবং জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যানের বক্তব্যে যতটা জেনেছি, সব মিলিয়ে প্রায় ২ হাজার প্রস্তাবনার মধ্যে মেক্সিমামের সাথেই সকল রাজনৈতিক দল একমত।
কিন্তু কিছু বিশেষ বিশেষ বিষয় প্রতিটি রাজনৈতিক দলের কিছু কিছু নিজস্ব মতামত আছে,যা তারা কমিশনকে প্রদান করেছেন।
এর মধ্যে একমাত্র বিএনপিই প্রতিটি বিষয়ে পয়েন্ট ধরে ধরে তাদের লিখিত মতামত প্রদান করেছে।
দীর্ঘ রাজনৈতিক এবং দেশ শাসনের অভিজ্ঞতার আলোকে বিএনপি তাদের মতামত প্রদান করেছে, যেটার সাথে কেউ কেউ একমত নাও হতে পারেন, সেটাই স্বাভাবিক।
ভিন্ন মতের সমন্বয়ে দেশ পরিচালনা করার নামইতো রাজনীতি!!
সবাই সবগুলো বিষয়ে একমত হয়ে গেলেতো আর আগামী নির্বাচনে কোন দলকেই আলাদা নির্বাচনী ম্যানুফেষ্ট দেবার প্রয়োজন পড়বে না।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটা নির্বাচনী ম্যানুফেষ্ট ছাপিয়ে দিয়ে দিলে এবং প্রধান উপদেষ্টা সেটা জাতির সামনে পড়ে শুনালে ই তো সবার আগামী দিনের রাজনৈতিক কর্মসূচি জাতির জানা হয়ে যাবে!!
—- এমন কিছু কি বাস্তবে সম্ভব??
দুনিয়ার ইতিহাসে এমন বিরল ঘটনা কি কখনও কোথাও ঘটেছে??
অসম্ভব-কাল্পনিক-অলীক কল্পনার সম্রাজ্যে আমাদের বাস!!
আর কিছু সংখ্যক অবুঝ মানুষ এগুলো নিয়েই খুব ব্যস্ত!!
কিন্তু একটা বারও উনারা ভেবে দেখেন না, এগুলো সকল পয়েন্টে সবাই একমত হলেই কি আমাদের জাতীয় সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে??
যে সকল বিষয় এখানে আলোকপাত করা হয়েছে, সেগুলো আমাদের দেশের মানুষের জীবন মানের কি পরিবর্তন করবে??
আমার এলাকার কৃষক, শ্রমিক, স্কুল শিক্ষক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, দিনমজুরের জীবন মানের কি সামান্য উন্নতি হবে, এই সবগুলো বিষয়ে সব রাজনৈতিক দল একমত হলে??
—— কোন কিছুই হবে না।
যদি না আমরা আমাদের মানসিকতা পরিবর্তন করি।
এখানে উল্লেখ্য ঐক্যমত্য কমিশন যত গুলো বিষয়ে সংস্কারের প্রস্তাব করেছে তার প্রতিটি বিষয়ই আজ থেকে তিন বছর আগে বিএনপি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা করে ৩১ দফা আকারে জাতির সামনে উপস্থাপন করেছে।
বলা যায় সেটার আলোকেই কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা করে একটা জাতীয় সনদ তৈরী করতে চাইছে।
এতক্ষণ যা আলোচনা করলাম, সেটার উপসংহার টানতে গেলে পরের দুইটা সংবাদ ক্লিপের দিকে দৃষ্টি দেওয়া জরুরী।
ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের বিষয়ে দেশের ৫২ টি রাজনৈতিক দল একমত!!—— যুগান্তরের নিউজ এটি।
কিন্তু প্রধান উপদেষ্টা আজ জাপানে বসে বল্লেন, শুধু একটি মাত্র রাজনৈতিক দল নাকি ডিসেম্বরে নির্বাচন চায়!!
—— আপনাদের কাছে প্রশ্ন, কোনটা সত্য??
যুগান্তর নাকি প্রধান উপদেষ্টা??
এমন জলজ্যান্ত মিথ্যাচারের পরে কি আপনারা এখনও বলবেন উনার উপর আস্থা রাখতে হবে??
একটা কথা মনে করিয়ে দিতে চাই।
প্রফেসর ইউনূস আমার সরাসরি শিক্ষক।
চমৎকার কথা বলেন উনি।
উনার কথার যাদুতে যেকাউকে উনি হিপ্নোটাইজ করে ফেলতে পারেন!!
এটা উনার একটা বিশেষ গুণ।
কিন্তু এই কথার আড়ালে বিগত ৯ মাসে উনি উনার গ্রামীণের নামে কত গুলো ব্যবসা হাতিয়ে নিয়েছেন, সেটার হিসাব কি আপনারা কেউ রাখেন??
স্টার্লিংএর সাথে ইন্টারনেট ব্যবসা, গ্রামীণ ইউনিভার্সিটি, ম্যান পাওয়ার ব্যবসা, শুনা যাচ্ছে ‘নগদ’ জায়গায় গ্রামীণ ওয়ালেট নামে নতুন আর একটা ব্যবসাও উনার প্রতিষ্ঠানের নামে নেওয়ার সকল কার্যক্রম প্রায় শেষ পর্যায়ে!!
মনেহচ্ছে উনার সকল পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা সম্পন্ন করতে যে সময় লাগবে সেই সময় উনি বের করে নিতে চাইছেন অন্যের ঘাড়ে বন্দুক রেখে।
মায়ানমার কে মানবিক করিডোর, চট্টগ্রাম বন্দর, ইশরাক কে শপথ না পড়ানো বিষয় গুলো আসলে কোন বড় ইস্যু বলে মনেহচ্ছে না।
এই সবকিছুর আড়ালে সময় ক্ষেপণ এবং ক্ষমতা দীর্ঘায়ীত করার পরিকল্পনা মাত্র!!!
বিরোধীতার জন্য বিরোধীতা না করে যুক্তিশীল বক্তব্যের মাধ্যমে সঠিক পথে দেশ এগিয়ে যাক্।
এক নির্বাচিত সরকারের হাতে দেশ পরিচালিত হলে, সেই সরকার আপনার আমার জবাবদিহিতার মধ্যে থাকতে বাধ্য।
কোন দল নিজেরা ক্ষমতায় যেতে পারবেন না বলে যদি মনে করেন এই অন্তর্বর্তী সরকারই থাকুক অনেক দিন।
তাহলে সেই সব দলের ভাইদের বলতে চাই, এভাবে যুগের পর যুগ চেষ্টা করলেও মনেহয় না আপনারা ক্ষমতার স্বাদ জীবনেও পাবেন!!!
তার চেয়ে বরং গণতান্ত্রিক চর্চা শুরু হলে, ক্ষমতাসীনদের ভুলের সুযোগে আপনারও কোন এক সময় ক্ষমতায় আসীন হতে পারেন!!!
• জনাব মামুনুর রশিদ (চাকসু মামুনের) ফেসবুক টাইমলাইন থেকে সংগৃহীত।









